মো আমান উল্লাহ, বাকৃবি প্রতিনিধি
আমাদের রিজার্ভ এখন ঠিক আছে। আমরা আমদানি করে চলতে পারবো। এখন রেমিট্যান্স বেড়েছে। রিজার্ভও বাড়বে আবার কমবে। কিন্তু শেষ হয়ে যায়নি, হবেও না।
“চলমান যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং খাদ্য নিরাপত্তাঃ কৃষি সংশ্লিষ্টদের ভূমিকা” শীর্ষক বার্ষিক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম। শনিবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম সম্মেলন কক্ষে ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে বাকৃবি শিক্ষক সমিতি।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাপে আছি। কিন্তু আমরা সুন্দরভাবে সেটির ব্যবস্থাপনা করছি। নির্বাচনকে সামনে রেখে এই বিষয়টিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে চাই অনেকে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। অর্থনীতি সব সময়ই উঠা-নামা করে, এটিই স্বাভাবিক।
করোনা এবং যুদ্ধ (রাশিয়া-ইউক্রেন) কোনোটার সাথেই বাংলাদেশ যুক্ত নয়। তারপরও সেটির বিরূপ প্রভাব আমাদের মোকাবেলা করতে হচ্ছে। আমাদের এখন মূল সংকট হিসেবে দেখা দিয়েছে আমাদের পর্যাপ্ত পরিমাণ রিজার্ভ আছে কি না? আমরা আমদানি করতে পারছি কি না?
করোনার সময়েও আমাদের উৎপাদনে তেমন প্রভাব পড়ে নি। তাই আমরা খাদ্য সংকটে পড়বো না, তবে বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলার জন্যে প্রস্তুুত থাকতে হবে। আওয়ামী লীগ সরকার থাকতে কখনোই দেশে খাদ্য সংকট হবে না। কোথায়, কখন ও কিভাবে বিনিয়োগ করতে হবে এবং উৎপাদন কতোটুকু বাড়াতে হবে এসব বিষয়ে আমাদের পরিকল্পনা আছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিবিজনেস এন্ড মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, করোনাকালীন সময়ে কৃষির অবদান উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ছিল। যেকোনো পরিস্থিতিতে কৃষিই আমাদের উদ্ধার করবে। বর্তমান বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ জলবায়ু পবিরর্তন ও যুদ্ধেও আমাদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে আমাদের কৃষি।
তিনি আরো বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, সাম্প্রতিক প্রাকৃতিক দূর্যোগ, বৈশ্বিক মন্দাসহ ডলারের মূল্যবৃদ্ধিতে আমাদের আমদানি খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের কৃষির যান্ত্রিকীকরণ ও রূপান্তর দরকার। যুদ্ধ, মহামারী ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমাদের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি ও নিরাপত্তা অর্জন করতে হবে। এজন্য বসতবাড়িতে সবজি চাষ, শহরাঞ্চলে কৃষি ব্যবস্থাপনার বিকেন্দ্রিকরণ করতে প্রধানমন্ত্রী যে নির্দেশ দিয়েছেন, তা সর্বস্তরে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এ সময় বাকৃবি উপাচার্য ড. লুৎফুল হাসান বলেন, বাকৃবি গবেষকেরা দেশের কৃষিতে যুগান্তরকারী পরিবর্তন আনতে সক্ষম। তারা তাদের গবেষণার মাধ্যমে দেশের কৃষিকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী খুব সুন্দরভাবে দেশ পরিচালনা করছেন। এখন পর্যন্ত কৃষিতে অভূতপূর্ব সাফল্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছেন। তাই বিচলিত হবার কিছু নেই।
বাকৃবি শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. গোলাম ফারুকের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. শামসুল আলম। প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান। মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান এএফএম হায়াতুল্লাহসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।