সাত কলেজের ‘স্বাধীনতার স্বপ্ন’: আট বছরের অচলায়তন ভেঙে নতুন পথে যাত্রা

0
28

আট বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের পর অবশেষে অধিভুক্তি থেকে মুক্তি পেল রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী সাত সরকারি কলেজ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে ‘সম্মানজনক পৃথকীকরণের’ পথে হাঁটতে যাচ্ছে ঢাকা কলেজ, ইডেন কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা কলেজসহ সাত কলেজ।

অধিভুক্তি থেকে মুক্তি: সুখবর নাকি নতুন সংকটের আভাস?

২০১৭ সালে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হওয়া সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে ভুগছিলেন প্রশাসনিক জটিলতা, সেশনজট এবং ফলাফল সংক্রান্ত নানা সমস্যায়। এসব সমস্যা থেকে মুক্তির জন্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলন আর চাপের মুখে অবশেষে আসা এ সিদ্ধান্ত যেন তাদের জন্য ‘প্রতীক্ষিত মুক্তি’।

তবে, মুক্তির এ পথে নতুন প্রশ্নও তৈরি হয়েছে। কে পরিচালনা করবে এই কলেজগুলো? কাদের অধীনে চলবে ভর্তি প্রক্রিয়া? এ প্রশ্নগুলো সামনে রেখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি কাজ শুরু করলেও এখনো কাঙ্ক্ষিত রূপরেখা তৈরি হয়নি।

‘স্বাধীন’ সাত কলেজ: কী হবে ভবিষ্যৎ?

সোমবার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং সাত কলেজের অধ্যক্ষদের এক বৈঠকে জানানো হয়, নতুন শিক্ষাবর্ষ (২০২৪-২৫) থেকে সাত কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আর হবে না। তবে, কলেজগুলোর পরিচালনার জন্য একটি স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলার সুপারিশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, “আমরা আশা করছি, নতুন কাঠামো তৈরি হলে এটি একটি মাইলফলক হবে। ভর্তির ক্ষেত্রে আপাতত সংকট থাকলেও ভবিষ্যতে স্থিতিশীলতা আসবে।”

আন্দোলন থেকে অর্জন: শিক্ষার্থীদের বিজয়

দীর্ঘ আট বছর ধরে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের ফলে যে পরিবর্তন এসেছে, তা তাদের ঐক্য এবং সাহসিকতার প্রতীক। অধিভুক্তির কারণে দীর্ঘ সেশনজট, ফলাফলের গড়িমসি, এবং অন্যান্য প্রশাসনিক জটিলতায় জর্জরিত শিক্ষার্থীরা এখন নতুন আলোর মুখ দেখার অপেক্ষায়।

‘সম্মানজনক পৃথকীকরণ’: চ্যালেঞ্জ কতটা বড়?

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাত কলেজের জন্য একটি সমন্বিত কাঠামো তৈরির চ্যালেঞ্জ বড়। শিক্ষাবিদ ও প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে এমন একটি রূপরেখা তৈরি করতে হবে, যা তাদের ভবিষ্যৎকে আলোকিত করবে।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ জানান, “আমরা বিষয়টি নিয়ে কাজ করছি। অংশীজনদের সঙ্গে আলোচনা করে একটি কার্যকর কাঠামো দাঁড় করাতে হবে।”

শেষ কথা

সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য এই সিদ্ধান্ত নতুন এক অধ্যায়ের সূচনা। তবে, তাদের ভবিষ্যৎ কতটা উজ্জ্বল হবে, তা নির্ভর করছে নতুন কাঠামো এবং তার কার্যকারিতার উপর। স্বতন্ত্র পরিচয় অর্জনের এই যাত্রা যেন তাদের শিক্ষার মানোন্নয়ন এবং সমৃদ্ধির দ্বার উন্মোচন করে—এই প্রত্যাশাই করছেন সবাই।

উত্তর দিন

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে