টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে পূর্ব শত্রুতার জেরে সিফাত মিয়া (১৩) নামে এক মাদরাসাছাত্রকে ডেকে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার রাতে পৌরসভাস্থ ত্রিমোহন মাঝিপাড়া রেললাইনের পাশে ধইঞ্চা ক্ষেতের ভেতর থেকে সিফাতের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সিফাত উপজেলার ভাতগ্রাম ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামের শহিদ মিয়ার ছেলে ও মির্জাপুর আফাজ উদ্দিন দারুল উলুম দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্র ছিল।
জানা গেছে, সোমবার বিকেলে সিফাত তার প্রতিবেশী বন্ধু নূরুল আমিনের সঙ্গে মাঝিপাড়া রেললাইনের ধারে চটপটি খেতে যায়। এ সময় অপরিচিত দুই ছেলে সিফাতকে পাঁচ মিনিটের কথা বলে ডেকে নিয়ে যায়। দীর্ঘ সময় পার হওয়ার পরও সিফাত ফিরে না আসলে নূরুল আমিন বাড়িতে গিয়ে খবর জানায়। বাড়ির লোকজন বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজির পর রাত সাড়ে ১১টার দিকে ত্রিমোহন মাঝিপাড়া রেল লাইনের পাশে ধইঞ্চা ক্ষেতে সিফাতের লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশ খবর দেয়। পরে লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ।
সিফাতের বাবা শহিদ মিয়া জানান, ৮-১০ দিন আগে বংশাই নদীর সেলুঘাট এলাকায় আমার ছেলে কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে গোসল করতে যায়। সেখানে গোড়াইল গ্রামের তালে সিদ্দিকীর নাতি হিরণ ঝাকি জাল দিয়ে মাছ ধরছিলেন। গোসলের সময় লাফালাফি করার অপরাধে হিরণসহ কয়েকজন আমার ছেলে সিফাতকে মারধর।
এ বিষয়ে গ্রাম্য সালিশে মাতাব্বররা হিরণকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা ও ১০টি জুতাপেটা করেন। তবে আমি জরিমানার টাকা নেইনি। তারই জেরে সিদ্দিকী ও তার নাতি হিরণ আমার ছেলেকে ডেকে নিয়ে পরনের বেল্ট দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে মাটির মধ্যে মুখ চেপে নির্মমভাবে হত্যা করেছে। এছাড়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এই হত্যার সঙ্গে পাশের বাড়ির তালে সিদ্দিকী ও তার নাতি হিরণ মিয়া জড়িত।
মির্জাপুর থানার উপ-পরিদর্শক মিনহাজ উদ্দিন বলেন, সিফাতের শরীরের বেশকিছু স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, হত্যাকাণ্ডে একাধিক ব্যক্তি জড়িত।
মির্জাপুর থানার ওসি শেখ আবু সালেহ মাসুদ করিম বলেন, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য একজনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে সিফাতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য টাঙ্গাইল শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।