মো: ইমন আল রশিদ উৎস
যার বাবাই ছিলেন কীর্তিতে মহীয়ান তাঁর মেয়ে হয়ে তিনি কীর্তি সৃষ্টি করবেন না তা কি করে হয়? প্রমত্তা পদ্মার বুক জুড়ে,বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার বিচক্ষণ চিন্তা- ভাবনার বহিঃপ্রকাশই আজকের এই পদ্মা সেতু।সাথে যোগ হল কীর্তিমানের নতুুন এক কীর্তি।
প্রধানমন্ত্রীর মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে দ্বার খুলে গেল দক্ষিণাঞ্চলের লাখো মানুষের স্বপ্নের। ৬.১৫ কিলোমিটারের সেতুটি আজ প্রস্তুুত হাজারো মানুষের আবেগ,ভালবাসা ও স্বপ্নের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে। যেই পদ্মা নদী ভাঙা-গড়ার গল্প শোনাতো আজ সেই পদ্মার বুকে অবাক কীর্তি পদ্মা সেতু, দেশের দক্ষিন-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার মানুষের আস্থার অবলম্বন।
এই অঞ্চলের মানুষের কাছে পদ্মা সেতু কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও আস্থার প্রতীক তা শুধু, ফেরি ঘাটে অ্যাম্বুলেন্সে ঘন্টার পর ঘন্টা আটকে থেকে অসুস্থ্য মাকে হারানো সন্তানই অনুভব করতে পারবে। তিন ঘন্টা দেরি হওয়াতে ইন্টারভিউ দিতে না পারা একজন বেকার ছেলেই সেতুটির গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারবে।
কুয়াশার কারনে ফেরি বন্ধ হওয়ায় ফ্লাইট মিস করা একজন রেমিটেন্স যোদ্ধা প্রবাসীই টের পাবে পদ্মাসেতুর কার্যকারিতা। হাড় ভাঙা পরিশ্রম করে সারাবছর পরিচর্যার পর, ঘন্টার পর ঘন্টা ফেরিঘাটের গরমে থেকে বস্তায় পচা সবজিগুলো দেখে ক্ষুব্ধ হওয়া কৃষকগুলোর রাগ হয়তো পদ্মা সেতুর কাছে নস্যাৎ হয়ে যাবে।
প্রচণ্ড ঝড়ে পদ্মায় ট্রলার সহ ডুবে যাওয়া সন্তানকে খুজে না পাওয়া বাবা-মা মনে মনে বলবে পদ্মা সেতু আগে হলে আর আমাদের এই দিন দেখতে হতো না। পদ্মা সেতু কখনোই একটি সাধারন সেতু ছিলোনা। যারা এই পথের ভুক্তভোগী একমাত্র তারাই জানে এই সেতুর প্রতিটি স্প্যান, প্রতিটি পিলারে-পিলারে কত শত গল্পের উপাখ্যান জড়িয়ে আছে।
ভাল কিছু করতে গেলে আলোচনা সমালোচনা হবেই, এটাই স্বাভাবিক।এই পদ্মা সেতুকে নিয়েও কম কাদা ছুড়াছুঁড়ি হয়নি। কিন্তু প্রমত্তা পদ্মার স্রোতের সাথে গাঁ না ভাসিয়ে স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে, শত সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে একজনের প্রজ্ঞা ও দূরদর্শী নেতৃত্বের জোরেই আজকের এই দৃশ্যমান পদ্মা সেতু।
আর এই কীর্তির শতভাগ দাবিদার হলেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা।কীর্তিমান বাবার কীর্তিমান মেয়ে বলে কথা। স্বপ্নের যোগাযোগের স্বপ্নের যাত্রাকে যারা প্রশ্নবিদ্ধ করেছিলেন তারা হয়তো এখন বুঝতে পারছেন যে, তাঁদের দাবায়া রাখা কঠিন।কোন অপশক্তিই তাদের দাবায়া রাখতে পারেনি আর পারবে ও না।
স্বপ্নের পদ্মাসেতু উদ্বোধন কালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন,‘এই সেতু বাংলাদেশের জনগণের। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে আবেগ, সাহসিকতা, সহনশীলতা। বাঙালি জাতির জেদ, প্রত্যয়। শেষ পর্যন্ত অন্ধকার ভেদ করে আলোর পথে যাত্রা করেছি। আমরা বিজয়ী হয়েছি।’ এই ভাষণের মাধ্যমেই বোঝা যায়, বাঙালি বীরের জাতি।এ জাতির জেদের ও সাহসিকতার কাছে সকল কিছুই পরাজিত ও নস্যাৎ।যা আমরা বারং বার প্রমান করে এসেছি এবং বুঝিয়ে দিয়েছি নেতৃত্বে অটুট থাকলে আমাদের পরাজয় করা দুষ্কর। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা আমাদের বাংলাদেশকে নিজের করে পেয়েছিলাম আর এখন সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তৈরি পদ্মা সেতুকে, “আমার টাকায় আমার সেতু, বাংলাদেশর পদ্মা সেতু”-এ স্লোগান নিয়ে গ্রহণ করা এবং এটিকে কাজে লাগিয়ে দক্ষিনাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটানো।