জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অস্বাভাবিক বৃষ্টিপাত, হঠাৎ অতি বৃষ্টি ও বাঁধ ভেঙে বন্যার কারণে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে পাকিস্তান। দেশটিতে এখন পর্যন্ত বন্যায় মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯০০ জনে।
দ্য ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনের (আইএসপিআর) বরাতে জিও টিভি জানায়, পাকিস্তানের বেলুচিস্তান, সিন্ধা, দক্ষিণ পাঞ্জাব ও খাইবার পাখতুনখাওয়াতে বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির কারণে বন্যা হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে সহায়তার আবেদন জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ। গত জুন থেকে এখন পর্যন্ত ৯০০ জন মানুষ বন্যায় মারা গেছেন। বৃহস্পতিবার জলবায়ুর প্রভাবে সৃষ্ট মানবিক বিপর্যয়ে পড়া বন্যার্তদের ৫০০ মিলিয়ন ডলার সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো।
জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্থা কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৩ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ৮২ হাজার ৩৩ বাড়িঘর ধ্বংস হয়েছে। ৭১০টি গৃহপালিত পশু মারা গেছে।
এনডিএমএ জানায়, বর্ষাকালের ভারী বর্ষণে ও বন্যায় ৪০০-এর মতো মানুষ মারা গেছেন। এর মধ্যে ১৯১ জন নারী রয়েছেন। এছাড়া এক হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাতে মানুষ বন্যার পানিতে ভেসে যাচ্ছে।
এদিকে, পাকিস্তানে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে সরকার।
জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী সিনেটর শেরি রেহমান বলেন, আগস্ট মাসে গড়ে ১৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এটি স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের চেয়ে ২৪১ শতাংশ বেশি। এছাড়া দেশের দক্ষিণাঞ্চলে, বিশেষ করে সিন্ধু এলাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে ৭৮৪ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এজন্য সতর্কতা জারি করা হলো।
তিনি বলেন, আবহাওয়া অফিস আমাদের পরিসংখ্যান জানিয়েছে। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে ভয়াবহ বন্যায় অনেক সেতু ভেসে গেছে। এছাড়া বিভিন্ন প্রদেশের অনেক এলাকায় যোগাযোগ অবকাঠামো ধ্বংস হয়ে গেছে।
শেরি বলেন, ইন্দো নদীর বর্তমান প্লাবন ২০১০ সালের ভয়াবহ বন্যাকে ছাড়িয়ে গেছে।
এ মন্ত্রী বলেন, এরইমধ্যে জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলওয়াল ভুট্টো জারদারিসহ সব কর্মকর্তা বিদেশ সফর বাতিল করেছেন।