দুনিয়াতে পোশাক-পরিচ্ছেদ মহান আল্লাহর নেয়ামতের অন্যতম নিদর্শন। পোশাক পরায় যেমন মানুষের লজ্জা-শরম নিবারন হয় পাশাপাশি মর্যাদাবোধ ও আভিজাত্য ফুটে ওঠে। সভ্যতা, সংস্কৃতি, সৌন্দর্য্য ও রুচিবোধ প্রকাশ পায়। শীত, গ্রীষ্মে আবহাওয়ার রুক্ষতা ও শুষ্কতা থেকে রক্ষা পায়।
কোরআন মাজিদে আল্লাহ তায়ালা পোশাকের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেছেন, ‘হে মানবজাতি! আমি তোমাদের জন্য পোশাকের ব্যবস্থা করেছি, তোমাদের দেহের যে অংশ প্রকাশ করা দোষণীয় তা ঢাকার জন্য এবং তা সৌন্দর্যেরও উপকরণ। বস্তুত তাকওয়ার যে পোশাক- সেটাই সর্বোত্তম। এসব আল্লাহর নির্দেশনাবলির অন্যতম, যাতে মানুষ উপদেশ গ্রহণ করে। (সুরা আরাফ, আয়াত: ২৬)
ইসলামে শুধু পোশাক পরিধানের গুরুত্বই তুলে ধরা হয়নি, বরং হাদিসে নবীজি ( সা.) এ বিষয়ে বিভিন্ন বিধি-নিষেধ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন কীভাবে পোশাক পরলে শালীনতা বজায় থাকে। নারী-পুরুষের পোশাকের বৈশিষ্ট্যের কথাও বলেছেন তিনি।
পোশাক মানুষের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয় বিষয় হলেও এক্ষেত্রে রাসূল ( সা.) নির্দেশনা মেনে দোয়া পড়লে তা আল্লাহর ইবাদতের অন্তর্ভূক্ত হবে। এছাড়া পোশাক পরিধানের দোয়া পড়লে এর বিশেষ ফজিলত রয়েছে। পোশাক পরার ফজিলত বর্ণনা করে আল্লাহর রাসূল ( সা.) বলেন-
‘যে ব্যক্তি নতুন কাপড় পরার সময় এ দোয়া পড়বে, আল্লাহ তায়ালা তাকে দুনিয়া ও পরকালে নিজের নিরাপত্তা ও পর্যবেক্ষণে রাখবেন।’ (তিরমিজি, ২/২৩০)
কাপড় পরিধানে দোয়া পরা আল্লাহর রাসূলের সুন্নাত। আর মুক্তাকিদের যে গুণ বর্ণনা করা হয়েছে, তাতে বেদয়াত থেকে বেঁচে সুন্নাত মোতাবেক চলার কথা রয়েছে। আল্লাহর রাসূল ( সা.) বলেন, ‘মুত্তাকীরাই আমার নিকটতম ব্যক্তি, তারা যে-ই হোক, যেখানেই থাকুক।’- (মুসনাদে আহমাদ, ২২০৫২)
এতএব যে ব্যক্তি সুন্নাতের উপর আমল করবে, তাকওয়া অবলম্বন করবে সে রাসূলুল্লাহ ( সা.)-এর কাছে থাকে, চাই সে যতই দূরে থাকুক। আর যে সুন্নাতের উপর আমল করবে না, সে রাসূলুল্লাহ ( সা.) থেকে দূরে, যদিও সে মদীনাতেই থাকে। তাই পোশাক পরিধানের আগে দোয়া পরার গুরুত্ব অপরীসিম।
নতুন কাপড় পরার দোয়া
আবু উমামা (রা.)-এর বর্ণনা থেকে বর্ণিত, উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.) নতুন কাপড় পরিধান করার সময় এই দোয়া পড়তেন। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫৬০)
দোয়াটি হলো-
আরবি: لْحَمْدُ لِلَّهِ الَّذِي كَسَانِي مَا أُوَارِي بِهِ عَوْرَتِي، وَأَتَجَمَّلُ بِهِ فِي حَيَاتِي
উচ্চারণ: আলহামদু লিল্লাহিল্লাজি কাসানি মা উয়ারি বিহি আওরাতি ওয়া আতাজাম্মালু বিহি ফি হায়াতি।
অর্থ: সব প্রশংসা আল্লাহর, যিনি আমাকে কাপড় পরিয়েছেন, যা দিয়ে আমি লজ্জাস্থান ঢেকে রাখি এবং জীবনে সৌন্দর্য লাভ করি।