স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় আব্দুল হাকিম মারা গেছেন ( ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নালিল্লাহি রাজিউন)। গতকাল রাত ২ টায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। ব্রেন স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে দীর্ঘদিন শয্যাশায়ী ছিলেন সাবেক এ ফুটবলার।
আব্দুল হাকিম ৭০ থেকে ৮০ দশকের দেশসেরা লেফট উইং ব্যাক ছিলেন। তিনি মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের পক্ষে অংশ নিয়ে বিশ্বের দরবারে ক্রীড়ার মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং মুক্তিযুদ্ধকে তুলে ধরেন।
ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে ১৯৬৫ সালে যশোর মডেল হাইস্কুলের পক্ষে আন্তঃস্কুল খুলনা বিভাগীয় চ্যাম্পিয়ন হন। ওই বছরই তিনি যশোর জেলা ফুটবল দলের পক্ষে খেলায় অংশ নেন। তিনি কর্মজীবনে ১৯৬৮ থেকে ফুটবল খেলোয়াড় সূত্রে খুলনা জুট মিলে পার্সেজ অফিসার হিসেবে যোগ দেন। ১৯৬৮ সালে ইস্ট পাকিস্তান যুব দলে যশোরের একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে তিনি অংশগ্রহণ করার সুযোগ পান।
১৯৬৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান সম্মিলিত বিশ্ববিদ্যালয় দলের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন। তার খেলার মূল পজিসন ছিল রাইট ব্যাক। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে কৃতিত্বের সঙ্গে খেলেছেন লেফট ব্যাক হিসেবে। তিনি ১৯৬৮-৬৯ ঢাকা লিগের দিলকুশা স্পোর্টিং ক্লাবের পক্ষে অংশগ্রহণ করেন এবং তার দল রানার্স আপ হবার গৌরব অর্জন করে।
১৯৭০-৭৬ ইপিআইডিসিতে (বর্তমান বিজেএমসি) যোগদান করেন। ওই সময় তিনি ঢাকায় অনুষ্ঠিত আগাখান গোল্ডকাপে অংশ নিয়ে বিদেশি দলসমূহের বিপক্ষে কৃতিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। ১৯৭২ সালে তিনি আসামের গৌহাটি বরদুলই শিল্ডে, ওই বছরে ঢাকা স্টেডিয়ামে কলকাতা মোহনবাগান এবং ইস্টবেঙ্গল দলের বিপক্ষে অংশগ্রহণ করেন।
১৯৭৭ সালে ঢাকা ওয়ান্ডারার্স এবং ১৯৭৮ সালে ওয়ারী ক্লাবের পক্ষে ঢাকা প্রথম বিভাগ ফুটবল লিগে কৃতিত্বের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৭৩ এবং ১৯৭৫ সালে তিনি বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত মারদেকা আন্তর্জাতিক ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করেন।
শেখ আব্দুল হাকিম মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন ‘স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের’ পক্ষে ভারতের এলাহাবাদ, বিহার, বেনারস, পাঞ্জাবসহ বিভিন্ন স্থানে প্রদর্শনী ম্যাচে অংশ নিয়ে বিশ্বের দরবারে ক্রীড়ার মাধ্যমে দেশকে মহান স্বাধীনতার দাবিকে তুলে ধরেন। যশোর তথা দেশের ক্রীড়াঙ্গণের গর্বিত সন্তান শেখ আব্দুল হাকিম তার সম্মাননা হিসেবে কেবলমাত্র ১৯৯৬ সালে যশোর চাঁদের হাট পদক পেয়েছিলেন।