পাশাপাশি ধার-দেনা বা সম্পত্তি বিক্রি না করে, প্রয়োজনে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বিদেশে যেতে উৎসাহিত করার কথাও বলেছেন তিনি।
সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সরকারপ্রধান প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে এই নির্দেশনা দেন বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম জানিয়েছেন।
বিদেশে কর্মী পাঠানোর বিষয়ে বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, “সেখানে যে বিষয়ে বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে, সেটি হল কোনোভাবে যাতে শ্রমিকরা যারা বিদেশে যাবেন, উনারা নিজেরাও যেন আমাদের প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় বা অধিপ্তরের সাথে যোগাযোগ রাখেন এবং তারা অতিরিক্ত অর্থ প্রদান যাতে না করেন।
“প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যাতে এই জিনিসটি ব্যাপকভাবে প্রচারে আনা হয়। মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারণা চালানো হবে। আর সরকারের যে চ্যানেল আছে, তার মাধ্যমে করবেই। জেলা-উপজেলায় দপ্তর আছে। স্থানীয় সরকারের সংস্থাগুলো আছে। ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সব তথ্য এক জায়গায় আনার নির্দেশনাও দিয়ে দেওয়া হয়েছে।”
অনেকে না জেনে সরাসরি টাকা দিয়ে যে প্রতারণার শিকার হয়, সে কথা তুলে ধরে খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “সেজন্য একটা সাজেশন এসেছে, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছে, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে তারা যাতে যায়।
”জমিজমা বিক্রি করে না গিয়ে ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে গেলে সুবিধাটা হবে; ব্যাংক কিন্তু তার অ্যাপয়েন্টমেন্ট কনফার্ম না করা পর্যন্ত পেমেন্ট করবে না। সেক্ষেত্রে সেও কিন্তু একটা নিরাপদ অবস্থায় থাকবে।”
মালয়েশিয়ায় গিয়ে নিঃস্ব হয়ে ফেরার কয়েকটি ঘটনা নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা তুলে ধরে সচিব বলেন, “মালয়েশিয়ায় গেছে তিন-চার লাখ টাকা করে খরচ করে, জমি বিক্রি করে… দুর্ভাগ্যজনকভাবে চার লাখ টাকা তুলতে পারেনি দুই বছরে। নিঃস্ব হিসেবে ফেরত আসতে হয়েছে।
”সেজন্য এগুলো বিশেষভাবে প্রধানমন্ত্রী ভালোভাবে ইনস্ট্রাকশন দিয়েছেন, বিদেশে যে লোকজন যাবে, এটা ভেরি প্রিসাইস এবং ট্রান্সপারেন্ট ওয়েতে করার জন্য, মিডিয়ার মাধ্যমে ব্যাপকভাবে প্রচার করে দিতে।”
বিদেশগামীদের উদ্দেশে আনোয়ারুল বলেন, “আপনাদের যদি টাকা-পয়সার দরকার হয়, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে ঋণ নিয়ে যান। ব্যাংক যখন আপনাকে ঋণ দেবে, অ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটার ছাড়া ঋণ দেবে না। তখন সেও সেইফ থাকবে।”
ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসে যাওয়ার সুবিধার কথা তুলে ধরে সচিব বলেন, “ব্যাংকের মাধ্যমে গেলে মাসিক কিস্তির টাকাটা পাঠাবে। আর ব্যাংকও দেখবে, নিয়োগকর্তার সাথে যোগাযোগ করে, আসলে ওই লোকটা ওখানে কাজ করছে কি-না, তার পেমেন্টের স্ট্যাটাস কি… সেক্ষেত্রে বিপত্তিটা কমে যাবে।”
ব্যাংক কত টাকা দেবে, এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “এটা আমি নির্দিষ্টভাবে জানি না। তবে যত টাকা লাগবে, তার কাছাকাটি একটা অ্যামাউন্ট পাবে।”
সচিব জানান, দেশে কর্মসংস্থান নিশ্চিতের ব্যবস্থা করার কথাও প্রধানমন্ত্রী বলেছেন। দেশে বেজার ১০০টি শিল্পপার্ক হচ্ছে, সেখানে লাখ লাখ লোকের প্রয়োজন হবে।
”আপনারা ক্যাপাসিটি বিল্ডিংয়ের উদ্যোগ নেন, খোঁজ নেন কোন অঞ্চলে কী রকম শ্রমিকের প্রয়োজন হবে, সে অনুযায়ী ট্র্রেইনিং নিয়ে আপনারা দেশেও ভালো টাকা-পয়সা ইনকাম করতে পারবেন।”