কুবি প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠ পুত্র ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছোট ভাই শহীদ শেখ রাসেলের ৫৮ তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে।
দিবসটি উপলক্ষে মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে একটি আনন্দ র্যালি বের করা হয়। র্যালিটি ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়। এ সময় শেখ রাসেলের ছবির সামনে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা।
পরে উপাচার্য অধ্যাপক এ এফ এম আবদুল মঈন বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে মুক্তমঞ্চে শিক্ষক, কর্মকর্তা, ছাত্রলীগ ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে শেখ রাসেলের জন্মদিনের কেক কাটেন।
কেক কাটার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন স্থানে বৃক্ষরোপণ করা হয়। পরে প্রশাসনিক ভবনের ৪১১ নাম্বার রুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
‘শেখ রাসেল দিবস’ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মুহ. আমিনুল ইসলাম আকন্দের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এফ এম আবদুল মঈন৷ প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য বলেন, ঘাতকরা শেখ রাসেলকে হত্যা করে বাংলাদেশকে থামাতে চেয়েছিল৷ তারা ক্ষমতা দখল করতে চেয়েছিল কিন্তু পারেনি। এমন কর্মকাণ্ড দেশের জন্য লজ্জাজনক। আর ভবিষ্যতে যেন এমন অপসংস্কৃতি কর্মকাণ্ড করতে না পারে তা আমাদের সকলে সচেতন হতে হবে৷ সতর্ক থাকতে এমন দিন যেন আমাদের সামনে আর না আসে।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ড. সেলিম মাহমুদ বলেন, শেখ রাসেল ছিলেন বাংলাদেশের একটা সম্পদ। যারা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারকে হত্যা করে দেশকে ধ্বংস করতে চেয়েছিলেন কিন্তু তারা সফল হতে পারেননি। এছাড়া, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট ঘাতকরা সরকার পরিবর্তন করার জন্য যে হামলা চালিয়েছে, তাদের সেই উদ্দেশ্য পূরণ হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে ঘাতকরা অনেক চেষ্টা করছিল যাতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার না হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২১ বছর পর আইন পরিবর্তন করে তার পরিবারের হত্যা বিচারের জন্য ঘাতকের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ছাত্র-রাজনীতির প্রথম কাজ হলো পড়াশোনা করা। কারণ তোমরা আগামীর সম্পদ৷ প্রধানমন্ত্রী সবসময় মেধাবী শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করেন। অবশ্যই রাজনীতি করা তোমার অধিকার, কিন্তু নিজেদের ক্যারিয়ারের দিকে নজর দিতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ সন্তান শেখ রাসেল আজকে দিনের জন্মগ্রহণ করেছিলেন। শেখ রাসেল যখন জন্মগ্রহণ করেছিলেন তখন বঙ্গবন্ধু দেশকে রক্ষার করার ব্যস্ত ছিলেন। তিনি তার সন্তানকে তেমন সময় দিতে পারেন নি। রাসেল ছোট বেলায় পিতার স্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। হয়তো আজকে তিনি বেঁচে থাকলে বাংলাদেশ আওয়ামিলীগকে নেতৃত্ব দিতেন।
তিনি আরও বলেন, আগামী বছর জাতীয় নির্বাচন তাই আমাদের নিজেদের মধ্যে সব বিবাদ ভুলে গিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামিলীগের পতাকাতলে সমাবেত হতে হবে। তাহলে আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে সামনে দিকে এগিয়ে যাব।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিভাগের চেয়ারম্যান, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু শিক্ষার্থীরা৷ আলোচনা সভা শেষে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু শিক্ষার্থীদের পুরষ্কার বিতরণ করা হয়।
এছাড়া দিবসটি উপলক্ষে জোহরের নামাজ শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে ফাতেহা পাঠ, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল হয়৷