কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আবাসিক হলসহ বিভিন্ন স্থানে ক্লোজড সার্কিট (সিসি) ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। সিসি ক্যামেরা বসানোর ঘন্টাখানিক পরেই ২টি ক্যামেরা উধাও হয়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) কাজী নজরুল ইসলাম হলে এ ঘটনা ঘটে। তবে হল ছাত্রলীগের এক সিনিয়র নেতার পছন্দ না হওয়ায় সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আবাসিক হল, ক্যাফেটেরিয়া, শহীদ মিনারসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ৩৪টি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তারই অংশ হিসেবে নজরুল ইসলাম হলের বিভিন্ন তলায় ৮টি ক্যামেরা বসানো হয়। সকালে ক্যামেরা বসানো হলেও কিছুক্ষণ পরে হলের পশ্চিম ব্লকের দ্বিতীয় তলা ও দক্ষিণ ব্লকের তৃতীয় তলা থেকে ২টি সিসি ক্যামেরা উধাও হয়ে যায়।
এদিকে সিসি ক্যামরা বসানো নিয়ে শুরু থেকে হল ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ইমরান হুসাইনসহ একাধিক নেতাকর্মী বিরোধীতা করে আসছে। হলের ভিতরে নিজেদের গোপনীয়তা বিঘ্নিত হতে পারে এমন দাবি তাদের। এ বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগ নেতা ইমরানের কাছে গেলে তিনি কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের উল্টো দোষারূপ করে এবং কেন সিড়ির পাশে (নিজের পছন্দ অনুযায়ী) হয়নি জানতে চান। তবে সংযোগ দেওয়ার পূর্বেই হল থেকে ক্যামেরা চুরির ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা সাধারণ শিক্ষার্থীদের।
সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রশাসনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী নজরুল হলের বিভিন্ন তলায় গতকাল ৫টি এবং আজকে সকালে ৩টি সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। কিন্তু ক্যামেরা বসানোর ঘন্টাখানিকের মধ্যে দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলার দুইটি সিসি ক্যামেরা উধাও হয়ে যায়। শ্রমিকদের কাছে ফুটেজ থাকলেও ওই ছাত্রলীগ নেতা সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে কিনা নাকি তারা মিথ্যা বলছে এমন সন্দেহ প্রকাশ করেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শ্রমিক বলেন, বিভিন্ন ফ্লোরে আমরা সিসি ক্যামেরা বসিয়েছি। সিসি ক্যামেরা লাগাতে লেগে হলের শিক্ষার্থীরা সিসি ক্যামেরা না লাগানোর জন্য বার বার নিষেধ করে। কাজ করার এক পর্যায়ে আমি বাহিরে গেলে এসে দেখি ২টি ক্যামেরা নাই। বিষয়টি নিয়ে আমি ছাত্রদের কাছে জানতে চাইলে ইমরান ও হলের সেকশন অফিসার নানাভাবে ধমক দেন। আমি আইসিটি সেলকে বিষয়টি জানিয়েছি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইমরান হুসাইন বলেন, সিসি ক্যামেরা লাগানো হয়েছিল কিনা সেটাও জানি না। সেখানে আমার বিরুদ্ধে কে অভিযোগ দিছে? তবে হলে ক্যামেরা লাগানোর বিষয়টি জানতে পেরে আমি প্রভোস্টের সাথে কথা বলেছি৷ এখানে শিক্ষার্থীদের গোপনীয়তা থাকে। আমি পরামর্শ দিয়েছি ড্রিলং ছাড়াও ক্যামেরা লাগানো যায়। তবে পরবর্তীতে কি হয়েছে সে বিষয়ে আমি অবগত নই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইসিটি সেলের সিনিয়র প্রোগ্রামার মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন বলেন, নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন স্থানে ৩৪টি সিসি ক্যামেরা বসিয়েছি। তবে নজরুল হলে ক্যামেরা পাওয়া যাচ্ছেনা এমন একটি বিষয় যারা কাজ করছে তারা জানিয়েছে। আমি বিষয়টি প্রভোস্ট স্যারকে অবগত করেছি। তবে হলটিতে সিসি ক্যামেরা লাগানো নিয়ে শুরু থেকে কয়েকজন ছাত্রনেতা নিষেধ করে আসছে।
হলটির প্রভোস্ট ড. মিহির লাল ভৌমিক বলেন, সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছে কিনা সেটা তো আমি জানি না। আমাকে বুঝায় দেওয়ার পর আমি বলতে পারব যে লাগায়ছে কিনা।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, আমি সিসি ক্যামেরা প্রণয়ন কমিটিতে ছিলাম। এখন যদি চুরি হয়ে যায় সেটি হল প্রভোস্ট দেখবে।