বাকৃবি প্রতিনিধি,
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী মোরশেদুল ইসলাম ইফতির মৃত্যুর ঘটনায় সড়ক অবরোধ করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের অব্যবস্থাপনাকে দায়ী করে মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে মূল সড়কে পোস্টার হাতে অন্দোলন করে তারা।
জানা যায়, সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দেবদারু সড়কে ইফতি ও তার বন্ধুরা মোটরসাইকেলে করে যাওয়ার সময় সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। পরে রাত আড়াইটায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে বাকৃবির সাধারণ শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি সম্বলিত পোস্টার নিয়ে আন্দেলন করে। মোট ৮টি দাবি নিয়ে বাকৃবি উপাচার্যের নিকট একটি স্মারকলিপি প্রদান করে তারা। লিখিত দাবিগুলো হলো, নিহতের পরিবারের ক্ষতিপূরণ, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পদত্যাগ, ময়মনসিংহ মেডিকেলে বাকৃবি শিক্ষার্থীদের আলাদা সুবিধা প্রদান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারী যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধকরণ, অ্যাম্বুলেন্স সুবিধা বাড়ানো ও হেলথকেয়ারের মান বৃদ্ধিকরণ, নির্মনাধীন অবকাঠামোতে সতর্কতা ব্যবস্থা, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাকর্মী বৃদ্ধিকরণ ও বিশ্ববিদ্যালয় সড়কগুলোর দ্রুত সংস্কার।
এছাড়া নিহতের সহপাঠীরা অভিযোগ করে বলেন, রাস্তা মেরামতের স্থানে কোনো সতর্ক সংকেত, রোড ডিভাইডার বা অন্য কোনো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা স্থাপন করা ছিলনা। চিকিৎসা চলাকালীন অবস্থায় বাকৃবি উপাচার্য স্বল্প সময়ের জন্য উপস্থিত ছিলেন। তারপরেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়সারাভাবে চিকিৎসা কার্যক্রম চালিয়েছে। পরবর্তীতে লাশ নিয়ে আসতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের সাহায্য চাইলে তিনি বলেন, এর আগে আমিও একবার অনেক ঝামেলা করে লাশ নিয়ে এসেছি। তোমরা ওখানকার কিছু ছাত্রনেতাদের সাহায্য নিয়ে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে আসো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মহির উদ্দীনকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে ফোন রেখে দেন।
অন্দোলন ও স্মারকলিপির বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. লুৎফুল হাসান বলেন, আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের অন্দোলনের স্মারকলিপিটি হাতে পেয়েছি। তাদের দাবি অনুযায়ী আমাদের যতটুকু করা সম্ভব আমরা পদক্ষেপ গ্রহণ করবো।
উল্লেখ্য, নিহত শিক্ষার্থী মোরশেদুল ইসলাম ইফতি বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে কেওয়াটাখালি মধ্যপাড়ায় পরিবারের সাথে থাকতেন। তিনি দিনাজপুর জেলার কমলাপুরের বাসিন্দা। তার বাবা মো. রিয়াজুল ইসলাম বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।