বাকৃবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অষ্টম সমাবর্তনে আয়োজকদের বিরুদ্ধে নানা অব্যবস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। সময়মতো সনদপত্র বিতরণ না করা, সনদে ভুল, উপহার না দেওয়া, অনুষ্ঠানে পানির ব্যবস্থা না করা, খাবারের বুথে গ্রাজুয়েটদের হয়রানির শিকার হওয়াসহ নানা অভিযোগ পাওয়া যায়।
সমাবর্তন আয়োজন নিয়ে অসন্তোষ বিরাজ করছে গ্রাজুয়েটদের মাঝে। এছাড়া সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সমালোচনার ঝড় তুলেছেন বাকৃবি গ্রাজুয়েটরা।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেডিয়ামে বাকৃবির অষ্টম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সমাবর্তনের বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। যেখানে গ্রাজুয়েটদের প্রত্যাশা ছিলো মহামন্য রাষ্ট্রপতির উপস্থিতি। এছাড়া সমাবর্তনে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ বা নোবেল বিজয়ী কেউ না থাকায় আশাহত হয়েছেন গ্র্যাজুয়েটরা। প্রত্যাশিত সম্মানিত অতিথি না থাকায় তাই শিক্ষামন্ত্রীর বক্তেব্যের পর অনুষ্ঠান ত্যাগ করে তারা। গ্রাজুয়েটদের অভিযোগ সমাবর্তন সভাপতি এবং সমাবর্তন বক্তা দুজনই রাজনীতিবিদ। বক্তব্যের বেশিরভাগ কথাই রাজনৈতিক।
মূলত মূল সনদপত্র প্রদানের জন্যই সমাবর্তনের আয়োজন করা হয়। সেই মূল সনদপত্র প্রদানের বিভিন্ন ত্রুটি নিয়ে অভিযোগ গ্রাজুয়েটদের। সনদপত্র বিতরণের একটি নির্দিষ্ট সময়ে ছিলো। কিন্তু সময়মতো সনদপত্র বিতরণ করা হয় নি।
ভেটেরিনারি অনুষদের ২০১০-১১ শিক্ষাবর্ষের গ্রাজুয়েট মো. সাজেদুল হক বলেন, প্রজ্ঞাপনে দেওয়া সময় অনুযায়ী এসেও গাউন সংগ্রহ করতে পারেনি অনেকে। একেক বার একেক সময় দেওয়ায় গ্রাজুয়েটদের অনেক বিভ্রান্তিতে পড়তে হয়েছে। দীর্ঘক্ষণের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীদের জন্য কোনো পানির ব্যবস্থাও করা হয়নি। তাই অনেকে বাধ্য হয়ে তাড়াতাড়ি অনুষ্ঠান ত্যাগ করে। এক হাজার মানুষের জন্য একটি খাবারের বুথ থাকায় হয়রানির শিকার হয়েছেন সকলে। এছাড়াও সনদ বিতরণে বিলম্ব হওয়ায় লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। সর্বোপরি সমাবর্তন আয়োজনের পদে পদে ছিলো অব্যবস্থাপনার চরম দৃষ্টান্ত।
গ্রাজুয়েটরা আরোও অভিযোগ করে বলেন, অনুষ্ঠানে সকলের বসার জন্য পর্যাপ্ত আসন ছিলো না। সমাবর্তন স্মরণিকাও পর্যাপ্ত সংখ্যক ছিলো না। এত বড় বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া সত্ত্বেও ভাড়া করা গাউন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও গাউন সংগ্রহের জন্য একাধিকবার বুথে যেতে হয়েছে। সমাবর্তন ব্যাগে আলাদা করে কোনো উপহারও দেওয়া হয় নি বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তাঁরা। গ্রাজুয়েট ও স্বর্ণপদক প্রাপ্তদের আলাদা রেজিস্ট্রেশনের জন্য জানানো হয়নি। ফলে গাউন ও প্রয়োজনীয় উপকরণ না থাকায় মূল অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারেননি বলে অভিযোগ করেন স্বর্ণপদকের জন্য মনোনিত এক গ্র্যাজুয়েট।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, সার্টিফিকেটে ভুল হওয়াটা আমাদের ব্যর্থতা, আমরা এর দায় স্বীকার করছি। আসলে এত বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থীদের সার্টিফিকেট এতো কম সময়ে তৈরী করাটা খুবই কঠিন। অমরা সবাই দিনরাত কাজ করে যাচ্ছি এই ভুল সংশোধনের জন্য। দ্রুত সময়ের মধ্যেই আমরা ভুল সাির্টফিকেটগুলো সংশোধন করে বিতরণ করে দিবো। আর খাবার নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি, পর্যাপ্ত খাবার বিতরণ করা হয়েছে। অনুষ্ঠন শেষে সবাই একসাথে খাবার সংগ্রহ করতে গিয়েছে তাই একটু বিলম্ব হয়েছে। এবারের বাজেট স্বল্পতার কারণে আমরা উপহার সামগ্রী বা অন্যান্য বিষয়গুলো খুব ভালোভাবে আয়োজন করতে পারিনি বলেও দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।