মো আমান উল্লাহ, বাকৃবি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) বেগম রোকেয়া আবাসিক হলে অবৈধভাবে সিট কর্তনের নোটিশের বিরুদ্ধে আন্দোলন করেছেন হলের মাস্টার্স থিসিস সেমিস্টারের শিক্ষার্থীরা। শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে হলের সামনের প্রধান সড়ক অবরোধ করে অবস্থান নেয় প্রায় অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী।
এসময় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা তাদের দাবিতে জানান, স্নাতকোত্তরে যারা আছেন,যারা ডিফেন্স দিচ্ছে বা দিবে সবাই হার্ডবাইন্ডিংস জমা দেওয়া ছাড়া বা হল ক্লিয়ারেন্স করা ছাড়া হলের সিট ছাড়বেন না। অফিসের সহকারী খুকি আন্টি সব মেয়েদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকেন। এছাড়াও সিট নিয়ে ঝামেলায় করে থাকেন তিনি। তাই তার পদত্যাগের দাবি করেন ওই হলের শিক্ষার্থীরা। যদি এখন থেকে হলের নিয়ম পরিবর্তন করা হয় তাহলে মেয়েদের সব হলগুলোর নিয়ম পরিবর্তন, নোটিশ ছাড়া হলের মেয়েদের সিট ছাড়ার জন্য বাধ্য না করা, হলের সিট সংকট অতি দ্রুত নিরসন করা এবং শিক্ষার্থীবান্ধব প্রভোস্ট চেয়ে মোট ৬ টি দাবি করে থাকেন তারা।
এসময় বেগম রোকেয়া হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে আন্দোলনকারী ছাত্রীরা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মানুযায়ী থিসিসের হার্ডবাইন্ডিংস জমা দেওয়া পর্যন্ত আমাদের ছাত্রত্ব বহাল থাকবে। কিন্তু থিসিস জমা দেওয়ার আগেই আমাদের হলের সিট ছেড়ে দেওয়ার নোটিশ দিয়েছেন প্রভোস্ট। এমনকি আমাদের সিটে অন্য শিক্ষার্থীদের উঠে যাওয়ার কথাও বলা হয়েছে। এ ব্যাপারে প্রভোস্টের সাথে কথা বলতে গেলে তিনি আমাদের সাথে উচ্চস্বরে কথা বলেন এবং অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
এছাড়াও হলের অফিস সহকারী খুকির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, কোনোরকম কথাবার্তা বা পূর্বাভাস ছাড়াই আমাদের রুমে গিয়ে ২২ তারিখের মধ্যে রুম ছাড়তে বলেন অফিস সহকারী খুকি। আমরা আমাদের সীটের বৈধতার কথা জানালেও আমাদের সিট ছাড়তেই হবে এমনটা বলেন এবং আমাদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। এমনকি আমাদের সিটে অ্যালোটমেন্ট দেওয়া শিক্ষার্থীদের ইন্ধন দিচ্ছেন যাতে তারা আমাদের সাথে বারংবার যোগাযোগ করে সিট খালি করতে বলেন।
এ ব্যাপারে বেগম রোকেয়া হলের প্রভোস্ট জানান, যারা ডিফেন্স দিয়েছে তাদেরকে ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে। যারা এখনও ডিফেন্স দেয়নি তাদের ক্ষেত্রে ডিফেন্স দেওয়ার পরে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
অভিযোগের ব্যাপারে অফিস সহকারী খুকীর সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,’ আমার দাঁতে ব্যাথা। আমি এখন কোনো কথা বলতে পারব না’। এরপর তিনি সাথে সাথে ফোন কেটে দেন।
জানা যায় এত সীট সংকটের পরেও নতুন করে ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের প্রায় ১০২ জন শিক্ষার্থীকে বেগম রোকেয়া হলে অ্যাটাচমেন্ট দেওয়া হয়েছে। এবং তাদের সীট ম্যানেজ করার জন্যই পূর্ববর্তী গনরুমগুলো ফাকা করা হচ্ছে। এ কারণে ছাত্রত্ব থাকা সত্ত্বেও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের সীট অবৈধভাবে কেটে দয়ে গণরুমের শিক্ষার্থীদেরকে মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের সিটে ওঠানো হচ্ছে।
উল্লেখ্য, ইতপূর্বেও বেগম রোকেয়া হলের আবাসন সমস্যা, অবৈধভাবে সীট দখল, একজনের সিটে আরেকজনকে তুলে দেওয়া, রুম তালাবদ্ধ করে রাখা, নানা অনৈতিক কাজের জন্য প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিকে কেন্দ্র করে একাধিকবার রাস্তা অবরোধ করেছে আবাসিক শিক্ষার্থীরা। আন্দোলন না করা পর্যন্ত কোনো সমস্যার সমাধান হয়নি বলেও জানা গেছে।