ঢাবির(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) রেজিস্টার বিল্ডিংয়ে হয়রানি বন্ধ করা সহ সাতদফা দাবি নিয়ে আন্দোলন ও অবরোধ করেন সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বেলা নয়টা থেকে দুপুর দুইটা পর্যন্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা নীলক্ষেত মোড় অবরোধ করে রাখেন। এমন সময় তারা সাতদফার পক্ষে নানারকম স্লোগান দিতে থাকেন। রাস্তা অবরোধের ফলে বন্ধ হয়ে যায় যানচলাচল। যানজট একদিকে ধানমন্ডি, অপরদিকে বকশিবাজার পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। পরে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দল সাত কলেজের সমন্বয়ক ও ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক সুপ্রিয়া ভট্টাচার্যের সঙ্গে দেখা করলে সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে দুপুর দুইটায় অবরোধ বন্ধ করেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের প্রস্তাবিত সাতদফা দাবি হল:
১. ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার বিল্ডিং এ সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের হয়রানির কারণ ব্যাখ্যা করতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে।
২.যে সকল শিক্ষার্থী পরবর্তী বর্ষের ক্লাস, ইনকোর্স পরীক্ষা ও টেস্ট পরীক্ষা পর্যন্ত অংশগ্রহণ করার পর জানতে পেরেছেন নন- প্রমোটেড তাদের মানোন্নয়ন পরীক্ষার মাধ্যমে পরবর্তী বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষার সুযোগ দিতে হবে।
৩. সকল বিষয়ে পাশ করার পরও একটা স্টুডেন্ট সিজিপিএ শর্তের জন্য নন প্রোমোটেড হচ্ছেন। সিজিপিএ শর্ত শিথিল করতে হবে।
৪. বিলম্বে ফলাফল প্রকাশের কারণ ও এই সমস্যা সমাধানে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। সর্বোচ্চ তিন মাস ( ৯০ দিনের মধ্যে) ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।৫. সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের প্রাতিষ্ঠানিকভাবে অভিভাবক কে বা কারা? কোথায় তাদের সমস্যাসমূহ উপস্থাপন করবে ? তা ঠিক করে দিতে হবে।
৬. একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রনয়ণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
৭. শিক্ষক সংকট, ক্লাসরুম সংকট নিরসনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
সরকারি বাংলা কলেজের শিক্ষার্থী সাগর নেওয়াজ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জানান আমাদের পরীক্ষার রেজাল্ট আটকে থাকায় আমাদের চার বছরের অনার্স করতে ছয় বছর লেগে যাচ্ছে,এতে দেখা যাচ্ছে আমাদের চাকরির বয়স শেষ হয়ে যাচ্ছে। শাহবাগের মোড়ে চাকরির বয়স ৩৫ করার জন্যে আন্দোলন হচ্ছে। এজন্য আমরা চাই সর্বোচ্চ ৯০ দিন মানে তিন মাসের ভেতর আমাদের পরীক্ষার রেজাল্ট দিয়ে দিক। এতে আমাদের চার বছরের অনার্স চার বছরের মধ্যেই শেষ করা সম্ভব হবে। এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় দাবি।
তিনি আরো বলেন, দেখা যায় আমাদের কোন কোন পরীক্ষার হলের পরীক্ষার্থীরা একাধারে সবাই ফেল করে। তাই এ ব্যাপারটিও প্রশাসনের সদয় দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ভর্তি পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা দিতে এসে যেন কোন অসুবিধায় পড়তে না হয় সে ব্যাপারে সাত কলেজের সমণ্বয়ক ও ঢাবি প্রশাসন এর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী সুমন জানান, আমরা পরীক্ষার রেজাল্টের ব্যাপারে কলেজে গেলে বলা হয় ঢাবি রেজিষ্টার বিল্ডিং এ যাও সেখানে গেলে বলে এগুলা আমাদের কাজ না কলেজে যাও। প্রোভিসি স্যার-প্রক্টর স্যারদের কাছে গেলে তারা বলেন তোমাদের দাবিটি পজেটিভ কিন্তু আমরা কোন পদক্ষেপ ও বাস্তবায়ন দেখতে পাই না। আমরা অভিভাবকহীনতায় ভুগছি এখন।
তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান বলেন, আমরা এখানে সাত কলেজের সব কলেজের সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা আছি।ঢাবি প্রশাসন যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের দাবিগুলো মেনে না নেয় ততক্ষণ আমাদের কর্মসূচি অব্যহত থাকবে।
এ ব্যাপারে ঢাবি প্রক্টর ড. মাকসুদুর রহমান নবপ্রভাতকে বলেন, ওদের সাতদফার ব্যাপারে এর আগেও ওদের তিনজন প্রতিনিধির সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। উপ-উপাচার্য(শিক্ষা) মহোদয়ের সাথে আলোচনা হয়েছে। ওদের দাবিগুলোর ব্যাপারে কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।