বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের সংস্কার নিয়ে সরব হয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ও জনপ্রিয় নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। তিনি বলেন, “চলচ্চিত্রের আলাদা মন্ত্রণালয় থাকা উচিত। আমাদের সমস্যাগুলো আমরা জানি, সমাধানও জানি। কিন্তু পরিবর্তন আনতে হলে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “দাবি আদায়ের জন্য শুধু আলোচনায় বসলে হবে না, প্রয়োজনে আপনারা রাস্তায় নামুন, আমাদের ঘেরাও করুন, আন্দোলন করে বাধ্য করুন যাতে আমরা চলচ্চিত্র সংস্কারে তৎপর হই।”
বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে বাংলাদেশ ফিল্ম স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত “জাতীয় চলচ্চিত্র সম্মেলনে” এসব কথা বলেন ফারুকী। সম্মেলনের প্রতিপাদ্য ছিল ‘সংস্কারে চলচ্চিত্র, পরিবর্তনে দেশ’। এতে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিনয়শিল্পী, নির্মাতা, প্রযোজকসহ চার শতাধিক প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যের শুরুতেই ফারুকী বলেন, “আমি একজন পরিচালক, সরকারি দায়িত্ব সাময়িক। আমার প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা নতুন সরকার থেকে সিনেমার জন্য কী করতে পেরেছি? সত্যি বলতে, পারিনি। কারণ, প্রতিদিন আমরা রাজনৈতিক অস্থিরতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি জানান, ২৫০ জন চলচ্চিত্র সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সংস্কারের জন্য একটি প্রস্তাবনা তৈরি করেছিলেন, যা তিনি হাতে পেয়েছেন। কিন্তু “নিয়মতান্ত্রিক কিছু বাস্তবায়ন করলেই অনেক সমস্যার সমাধান সম্ভব, অথচ আমরা তা করিনি।”
সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকার কথা ছিল তথ্য উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম ও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের। কিন্তু তারা আসেননি, যা শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও নির্মাতাদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করেছে।
সম্মেলনে বক্তব্য দেন—
চলচ্চিত্র অনুদান কমিটির সদস্য আকরাম খান
নজরুল ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ও জনপ্রিয় গীতিকার লতিফুল ইসলাম শিবলী
নির্মাতা রায়হান রাফী
প্রযোজক শাহরিয়ার শাকিল
অভিনয়শিল্পী ইমতিয়াজ বর্ষণ ও জান্নাতুল ফেরদৌসি ঐশী
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিডিয়া সেলের সদস্য মাশরুর আলম
ফারুকীর বক্তব্য স্পষ্ট—শুধু আলোচনা নয়, সংস্কার আনতে হলে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে। চলচ্চিত্রের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি তিনি তুললেও, সেটি বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব হবে তা এখনও অনিশ্চিত। তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে, তাতে বলা যায়, সংস্কারের দাবিতে নতুন আন্দোলনের সূচনা হতে পারে।