যুক্তরাষ্ট্রে ফাইভ–জি সেবা চালু নিয়ে বিশ্বজুড়ে এয়ারলাইনসগুলোর মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এ জন্য ফ্লাইটের সময়সূচি ও ফ্লাইট চলাচলের জন্য বিমানবন্দরে থাকা উড়োজাহাজের সময়সূচি সমন্বয় করা হচ্ছে। এয়ারলাইনসগুলোর শঙ্কা, বিমানবন্দরের কাছে ফাইভ–জি চালু হলে সুরক্ষাব্যবস্থায় মারাত্মক প্রভাব ফেলবে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্থানীয় সময় বুধবার মার্কিন বিমানবন্দরগুলোর কাছে ফাইভ–জি চালুর পরিকল্পনা ছিল দুই কোম্পানি এটিঅ্যান্ডটি ও ভেরাইজনের।বিজ্ঞাপন
যুক্তরাষ্ট্রের ১০টি বড় এয়ারলাইনস সতর্ক করেছে, ফাইভ–জি চালু করা হলে ফ্লাইট চলাচলে বড় ধরনের ব্যাঘাত ঘটবে। কোম্পানিগুলো বলছে, পরিকল্পনামাফিক আজ বুধবার থেকে মুঠোফোনে ফাইভ–জি চালু করার যে কথা রয়েছে, সেটা করা হলে ‘এড়ানো যাবে না, এমন একটি সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক বিপর্যয়’ দেখা দেবে।
এমন উদ্বেগ জানিয়ে মার্কিন পরিবহনমন্ত্রী, ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন, ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশনের চেয়ারম্যান, ন্যাশনাল ইকোনমিক কাউন্সিলের পরিচালককে চিঠি দিয়েছেন আমেরিকান এয়ারলাইনস, ডেলটা এয়ারলাইনস, ইউনাইটেড এয়ারলাইনসসহ ১০টি এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহী।
মার্কিন বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষকে যৌথভাবে দেওয়া চিঠিতে দেশটির ১০টি এয়ারলাইনসের প্রধান নির্বাহীরা বলেছেন, উড়োজাহাজে বিশ্বজুড়ে যাত্রী পরিবহন, পণ্য পরিবহন, সরবরাহব্যবস্থা, প্রয়োজনীয় ওষুধ ও চিকিৎসা সরবরাহের মতো কার্যক্রম চালাতে উল্লেখযোগ্য ব্যাঘাত এড়াতে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
দুবাইভিত্তিক এমিরেটস এয়ারলাইনস বলেছে, শিকাগো, নিউইয়র্ক, সান ফ্রান্সিসকোর মতো যুক্তরাষ্ট্রের একাধিক শহরে ফ্লাইট চলাচল বাতিল করবে। এদিকে জাপান এয়ারলাইনস এবং এএনএ হোল্ডিংস মঙ্গলবার বলেছে, কিছু রুট তার পরিহার করবে এবং তাদের বহরে থাকা বোয়িংয়-৭৭৭ যুক্তরাষ্ট্রে চলাচল করবে না।
দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক কোরিয়ান এয়ারলাইনস বলেছে, তাদের বহরে থাকা বোয়িং-৭৭৭ ও ৭৪৭-৮ মডেলের উড়োজাহাজগুলো ফাইভ–জি সেবার কারণে ক্ষতির মুখে পড়েছে। ভারতীয় এয়ারলাইনস এয়ার ইন্ডিয়া সতর্ক করেছে, বুধবার থেকে তারা যুক্তরাষ্ট্রে চলাচলকারী তাদের ফ্লাইট কমাবে, নয়তো সময়সূচি বদলাবে।
ফাইভ–জি চালু হলে ফ্লাইট চলাচলে কি সমস্যা
ফাইভ–জি মূলত বেতার তরঙ্গের ওপর নির্ভরশীল। যুক্তরাষ্ট্রে ফাইভ–জি সেবা দেওয়ার জন্য যে স্পেকট্রামটি বরাদ্দ করা হয়েছে, সেটি সি-ব্যান্ড নামে পরিচিত। এ তরঙ্গের অবস্থান উড়োজাহাজে উচ্চতা মাপার জন্য ব্যবহৃত রেডিও তরঙ্গের খুব কাছাকাছি। এর মাধ্যমেই ফ্লাইট উড্ডয়ন ও অবতরণের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়।
এয়ারলাইনসগুলো শঙ্কা করছে, ফাইভ–জির জন্য ব্যবহৃত বেতার তরঙ্গ উড়োজাহাজে ব্যবহৃত তরঙ্গের খুব কাছাকাছি হওয়ায় ফাইভ–জি চালু হলে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত বেতার তরঙ্গ যথাযথভাবে কাজ করবে না। এতে ফ্লাইট চলাচলের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে, বিশেষ করে উড়োজাহাজগুলো যখন অবতরণ করবে।