কানজুল কারাম কৌষিক
ছাত্রলীগের সম্মেলন ও নতুন নেতৃত্বের ব্যাপারে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে এ বিষয়ে কথা হয়েছে। বয়সসীমা ২৯ এর বেশি বাড়বে না।
আগামীকাল মঙ্গলবার( ৬ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সম্মেলন শুরু হবে।
উদ্ভোদন করবেন বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ এর সভাপতি, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার বয়সের ব্যাপারটি অনানুষ্ঠানিকভাবে স্পষ্ট করেন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বয়সের ব্যাপারে তার আলোচনা হয়েছে। এবারও বয়সসীমা হবে ২৯ বছর। এটা বাড়ানো হবে না।
এর আগে, গত ৩০ নভেম্বর ছাত্রলীগের ৩০তম সম্মেলনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশীদের ফরম সংগ্রহ এবং জমা দেওয়া শুরু হয়। যা ৩ ডিসেম্বর শেষ হয়েছে।জানা গেছে, দুই পদে আড়াই শতাধিক আবেদন জমা পড়েছে। এর মধ্যে সভাপতি পদে ৯৬টি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে ১৫৭টি আবেদন জমা পড়েছে।
জানা যায়, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্রে সদস্যদের বয়সসীমা রয়েছে অনূর্ধ্ব ২৭ বছর। কিন্তু নিয়মিত সম্মেলন না হওয়ায় গত তিনবার বয়সসীমা দুই বছর বাড়িয়ে অনূর্ধ্ব ২৯ বছর করা হয়। এর আগে সভাপতি হিসাবে আল নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক হিসাবে লেখক ভট্টাচার্য দুই বছর ১১ মাস দায়িত্ব পালন করছেন।
করোনাভাইরাসের কারণে তারা যথাসময়ে সম্মেলন করতে পরেননি। ফলে এবারের সম্মেলনেও বয়স বাড়ানোর বিষযটি নিয়ে আলোচনায় আসে।
বয়সসীমার এ ব্যাপারটি স্পষ্ট হওয়ায় এবার নেতৃত্বের দৌড়ে এগিয়ে আছেন প্রায় ১৮/২০ জন পদপ্রত্যাশী। এদের অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অনেকেই ২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে প্রত্যক্ষভাবে মাঠে ছিলেন।
এমন প্রার্থীদের মধ্যে আছেন চট্টগ্রাম বিভাগের শিক্ষা ও পাঠচক্রবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ লিমন, তিনি এর আগে মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এবং তার আগে একই হলের কর্মসূচি ও পরিকল্পনাবিষয়ক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। উপ সমাজ সেবা সম্পাদক ও ডাকসু সদস্য তানভীর হাসান সৈকত ও বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী সজিব, সাংঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী প্রমুখ।
বরিশাল অঞ্চল থেকে আছেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক সবুর খান কলিন্স ও উপগণশিক্ষাবিষয়ক উপসম্পাদক সোলাইমান ইসলাম মুন্না। সবুর খান কলিন্স সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক ও ফজলুল হক মুসলিম হলের নাট্য ও বিতর্কবিষয়ক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আর সোলাইমান ইসলাম মুন্না ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সাধারণ সম্পাদক, জহুরুল হক হলের দপ্তর সম্পাদক এবং তার আগে বরিশাল মহানগরের ১০নং ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
মাদারীপুর অঞ্চল-ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক খন্দকার জামি উস সানি ও হাজী মুহাম্মদ মহসিন হলের সভাপতি শহিদুল হক শিশির। জামি উস সানি এর আগে বুয়েট ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন।
অন্যদিকে, শিশির হল সংসদের সাবেক ভিপি এবং হলের সাবেক ছাত্রলীগের সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। উভয়ের পরিবারই পারিবারিকভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
খুলনা অঞ্চল-কেন্দ্রীয় মানবসম্পদবিষয়ক সম্পাদক নাহিদ হাসান শাহিন, যিনি সূর্যসেন হল ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য। এছাড়া একই অঞ্চলের রয়েছেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপবিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক খন্দকার আহসান হাবিব।
এছাড়া ময়মনসিংহ থেকে রয়েছেন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক রাশিদ শাহরিয়ার উদয়। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসম্পাদক এবং মুক্তিযোদ্ধা সংসদ সন্তান কমান্ডের ত্রাণ ও পুনর্বাসনবিষয়ক সম্পাদক হিসাবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। একই অঞ্চলের ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক রাকিব সিরাজীও শীর্ষ পদের আলোচনায় রয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আলোচনায় রয়েছেন আল আমিন শেখ। তিনি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের উপপ্রচার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
নারী নেত্রীদের মাঝে আলোচনায় আছেন সংগঠনটির কেন্দ্রীয় সহসভাপতি তিলত্তমা শিকদার, মুক্তিযোদ্ধা ও গবেষণাবিষয়ক উপসম্পাদক রনক জাহান রাইন। পারিবারিকভাবেও তারা আওয়ামী লীগ রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
বিগত সময়ের নেতৃত্ব দেখে অনুমান করা হচ্ছে
বৃহত্তর ফরিদপুর,
বরিশাল ও খুলনা, চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ ও উত্তরবঙ্গের প্রার্থীদের প্রাধান্য এবার থাকতে পারে।