ঢাবি প্রতিনিধি
বিএনপি নেতার পুত্র মাহমুদুর রহমান আলিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ পেয়ছেন।
আলিফের বাড়ি টাঙাইলের ঘাটাইল উপজেলার আনেহলা ইউনিয়নে। আলিফের বাবা শফিউর রহমান মুক্তা ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির ৩ নং সহ-সভাপতি ও তার দাদা আকবর আলী মৌলভী ৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর দোসর রাজাকারের সদস্য ছিলেন বলে উল্লেখ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়েছেন আনেহলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার মো.শাহজাহান।
গত ২২ নভেম্বর একটি ফেসবুক স্ট্যাটাসে তালুকদার মো. শাহজাহান উল্লেখ করেন,’রাজাকারের বংশধরগণ যদি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখার যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক হয় তাতে কি আমার মত আওয়ামী পরিবারের সন্তানের অন্তর জ্বালা হবে না?নির্মমতা কত দূর হলে ছাত্রলীগ হবে নিলর্জ্জ?বুকের ব্যথা বুকে চাপায়ে নিজেকে দিয়েছি ধিক্কার।’
তিনি তার স্ট্যাটাসে আরো উল্লেখ করেন,’মানবতার মা সফল প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছিলেন কাউকে নেতা বানানোর আগে তার পরিবার খোজ খবর নাও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ এত বেশি খোজ খবর নিলেন যে, স্বাধীনতা বিরোধী, পাকিস্তানের প্রেতাত্মা, ঘাটাইল উপজেলা বিএনপির সহসভাপতির ছেলে কে ছাত্রলীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক করে দিলেন।
মাহমুদুর রহমান আলিফ হল জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শান্ত’র অনুসারী। শান্ত ঢাবি শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।
এ বিষয়ে মাহমুদুর রহমান আলিফের সাথে যোগাযোগ করতে গেলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
আনেহলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তালুকদার মো.শাহজাহান বলেন,’ আলিফের ব্যাপারে ফেসবুকে আমার লিখা স্ট্যাটাসটি সত্য। আলিফের পরিবার সর্বদাই আওয়ামিলীগের বিরোধী কার্যক্রমে লিপ্ত থাকে। তার বাবা বর্তমানে ইউনিয়ন বিএনপির ৩ নং সহ সভাপতি। সরকার বিরোধী কার্যক্রমের জন্যে তার নামে মামলা ও হয়েছে। আলিফের দাদা ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা বিরোধী ছিলো। আমার বক্তব্যের পক্ষে সকল ধরনের প্রমাণাদি আমার কাছে আছে।’
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মেহেদী হাসান শান্ত বলেন, “আমার হলের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক (আলিফ)এর পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড সম্পর্কে আমি অবগত আছি। সে স্কুল কলেজ জীবন থেকেই ছাত্রলীগের কর্মী ছিলো এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সব প্রোগ্রামে সে থাকে। সে একাত্তরের চেতনায় বিশ্বাসী । তার বাবা কোন রাজনৈতিক সংগঠন এর সাথে জড়িত নয়। তার দাদা একজন সার্টিফিকেটধারী মুক্তিযোদ্ধা। তার সকল তথ্য জেনেই বঙ্গবন্ধু হল ছাত্রলীগে পদ দেয়া হয়েছে।”
হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান বলেন,’ আলিফ স্কুল কলেজ থেকেই ছাত্রলীগের কর্মী বলে আমরা খবর নিয়েছি। তার এলাকার সাংসদ ছোট মনির আমাদেরকে সে বিষয়ে নিশ্চিত করেছে। তার বাবা ও দাদার ব্যাপারে আমি অবগত নই।,”
উল্লেখ্য, আলিফের বিরুদ্ধে গত রমজান মাসে রাজধানীর আজিজ সুপার মার্কেট থেকে টাকা না দিয়ে পাঞ্জাবি নিয়ে আসার অভিযোগও রয়েছে। এ নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদও প্রকাশিত হয়েছে।