খুলনার শান্তিধাম মোড়ে ‘পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্র’ ক্লাবের কার্যালয়ে গণঅধিকার পরিষদের ব্যানার ঝোলানোর ঘটনা এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। ক্লাব দখল নিয়ে একদিকে অভিযোগ আর অন্যদিকে জনস্বার্থের দোহাই—এই টানাপোড়েনের গল্প যেন নাটকীয় মোড় নিচ্ছে।
সোমবার দুপুরে গণঅধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে ক্লাবের নাম সরিয়ে নিজেদের কার্যালয়ের ব্যানার ঝুলিয়ে দেন বলে অভিযোগ করেছেন ক্লাবটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মো. নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, “আমরা সরকারিভাবে বরাদ্দ নিয়ে এখানে কার্যক্রম চালাচ্ছিলাম। ছয় মাস ধরে ক্লাবটি বন্ধ ছিল। তবুও এমন দখলদারিত্ব মেনে নেওয়া যায় না।”
তবে গণঅধিকার পরিষদের খুলনা মহানগর শাখার সাধারণ সম্পাদক শেখ রাশেদুল ইসলাম ভিন্ন কথা বলছেন। তিনি বলেন, “এটি দখল নয়, এটি জনস্বার্থে উদ্যোগ। দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল, ক্লাবটি অনৈতিক কার্যকলাপের আখড়া হয়ে উঠেছিল—জুয়া ও অসামাজিক কার্যক্রমের কেন্দ্র।”
তিনি আরও দাবি করেন, “আমরা ভবনটি ইজারা নিতে আবেদন করেছি। তবে ক্লাবের অনৈতিক কার্যক্রম থামাতে এবং ভবনটি রক্ষা করতে ব্যানার টানানো হয়েছে।”
পঞ্চবীথি ক্রীড়াচক্রের কার্যক্রম ১৪-১৫ বছর ধরে গণপূর্ত বিভাগের এই ভবনে চলছিল। ক্লাবটি স্থানীয় ক্রীড়াপ্রেমীদের আস্থার জায়গা হলেও ক্লাব বন্ধ থাকায় এর ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। গণঅধিকার পরিষদ বলছে, “বারবার সতর্ক করা হলেও ক্লাব কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি, তাই বাধ্য হয়েই আমরা এই পদক্ষেপ নিয়েছি।”
এলাকাবাসীর একাংশ বলছেন, ক্লাবটি দীর্ঘদিন তালাবদ্ধ থাকায় সেখানে কোনো অপকর্ম হয়েছে কি না, তা নিশ্চিত নয়। অন্যদিকে, গণঅধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে অভিযোগ তোলা হয়েছে যে, ক্লাবটি দীর্ঘদিন ধরে নৈতিকতার সীমা অতিক্রম করে চলছিল।
ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম জানিয়েছেন, এই ঘটনা নিয়ে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অন্যদিকে, গণঅধিকার পরিষদ ইজারা নেওয়ার বিষয়টি এগিয়ে নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই পরিস্থিতি শুধু ক্লাব বনাম সংগঠনের দ্বন্দ্ব নয়, বরং খুলনার সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পরিবেশের গভীরতর সংকটের প্রতিফলন। ‘দখল নাকি জনস্বার্থ’—এই বিতর্কের সমাধান সময়ই বলে দেবে।