বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “স্বৈরাচারের মাথাটা পালিয়ে গেলেও তাদের অবশিষ্ট অংশ দেশে এখনো সক্রিয় এবং বিভিন্নভাবে মাথাচাড়া দেয়ার অপচেষ্টা চালাচ্ছে।”
শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জে জেলা বিএনপির সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।
তারেক রহমান বলেন, “যদি দেশ ও জনগণের অধিকার রক্ষা করতে হয়, তবে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে যারা স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, তারা চরম নিপীড়নের শিকার হয়েছে। তবু আমরা পিছু হটিনি, সামনের দিকেই এগোতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের মধ্যে মত পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু দিন শেষে দেশের স্বার্থেই আমাদের এক থাকতে হবে। দেশের পুনর্গঠনের কাজ আমাদের সামনে। আমাদের ৩১ দফা পরিকল্পনার মধ্যে শিক্ষার অধিকার, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি ও শিল্পখাতে উন্নয়ন এবং বেকারত্ব দূরীকরণ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।”
তিনি বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বলেন, “গত ১৫ বছর জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। অস্ত্রের মুখে অধিকার কেড়ে নেয়া হয়েছে। আমরা দেখেছি ভোটারবিহীন নির্বাচন, দেখেছি ভোট ডাকাতি। জনগণের ভোটাধিকার নিশ্চিত না হলে রাষ্ট্র মেরামতের কাজ সম্ভব নয়। একমাত্র জাতীয় নির্বাচনই পারে জনগণের রায় প্রতিষ্ঠা করতে।”
তারেক রহমান সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বলেন, “উন্নয়নের নামে দৃশ্যমান কিছু স্থাপনা তৈরি করা হলেও তার আড়ালে লাখ লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হয়েছে। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে, দেশকে ধ্বংসের কিনারায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।”
তারেক রহমান বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “বিএনপি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল। আমাদের কেবল নিজেদের মধ্যেই ঐক্য গড়ে তুললে চলবে না, যারা দেশ ও জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দেয়, তাদের সঙ্গেও ঐক্য গড়ে তুলতে হবে।”
সম্মেলনের উদ্বোধক বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু বলেন, “শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান কারও হত্যা নয়, বরং জনগণের সমর্থনেই ক্ষমতায় এসেছিলেন। তিনি এই দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং বৈদেশিক শ্রম বাজার ও পোশাকশিল্পের ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন, যা আজ দেশের অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি।”
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ মো. সেলিম ভূঁইয়া, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মো. মোস্তাক আহম্মেদ, কেন্দ্রীয় অর্থনৈতিকবিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন শ্যামলসহ অন্যান্য নেতারা।
সম্মেলনের শেষ প্রান্তে তারেক রহমান সবাইকে একতাবদ্ধ থাকার শপথ করিয়ে বলেন, “দেশকে এগিয়ে নিতে ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই। এই সম্মেলন হোক নতুন পথচলার অঙ্গীকার।”