কুমিল্লায় যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হওয়ার পর যুবদল নেতা মো. তৌহিদুল ইসলামের মৃত্যুর প্রতিবাদে শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, মশাল মিছিল ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা পৃথকভাবে এসব কর্মসূচি পালন করে।
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোট সন্ধ্যায় টিএসসি থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমাবেশ করে। এর পরপরই ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীবৃন্দ’ ব্যানারে ভিসি চত্বরে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের সমাবেশে বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের সভাপতি মিতু সরকার বলেন, “জুলাই গণ-অভ্যুত্থান শেষ হলেও গুম-খুনের রাজত্ব শেষ হয়নি। সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়ায় জনগণ আরও অনিরাপদ হয়ে পড়েছে।”
বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র পরিষদের সভাপতি অঙ্কন চাকমা বলেন, “সেনাবাহিনীর মাধ্যমে নাগরিক হত্যার ইতিহাস পুরোনো। পাহাড়ে সেনা নিপীড়নের চর্চা এখন সমতলে গুম-খুনের মাধ্যমে অব্যাহত আছে।”
গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ চৌধুরী বলেন, “যারা সেনা মদদে ক্ষমতায় এসেছে, তারা জনগণের সঙ্গে বেইমানি করেছে। ফলে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের ঘটনা বাড়ছে।”
সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক রাফিকুজ্জামান ফরিদ বলেন, “বাংলাদেশ পুলিশি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে। গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী শাসন পুনরুজ্জীবিত হচ্ছে।”
সমাবেশ থেকে যৌথ বাহিনীর হাতে আটক যুবদল নেতা তৌহিদুল ইসলামের হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার, সেনাবাহিনীর ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা প্রত্যাহার এবং সেনা বাহিনীকে ব্যারাকে ফেরানোর দাবি জানানো হয়।
এর আগে, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে মশাল মিছিল ও সমাবেশ করে। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সৈকত আরিফ বলেন, “গুম-খুন-বিচারবহির্ভূত হত্যার মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শাসন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জনগণের আন্দোলনের মাধ্যমে সেই শাসনের পতন হলেও হত্যাকাণ্ডের সংস্কৃতি এখনও চলছে।”
ছাত্র সংগঠনগুলোর দাবি, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের অবসান ঘটিয়ে প্রকৃত গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।