শেষ ওভারের উত্তেজনা, মাঠে দুলছিল ভাগ্যের দোলাচল। খুলনার জয়ের জন্য তখন দরকার ২৬ রান। রিপন মণ্ডলের প্রথম দুই বলেই নাঈম শেখ উড়িয়ে মারলেন টানা দুই ছক্কা, জমে উঠল ম্যাচ। তবে তৃতীয় বলেই ঘটল নাটকীয়তা। স্লগ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বল উড়ল শর্ট থার্ডম্যানে, আর ডানদিকে ঝাঁপিয়ে এক হাতে অবিশ্বাস্য ক্যাচ তুলে নিলেন ডাভিড মালান। হতাশায় নাঈম তখন ব্যাটে মাথা ঠেকিয়ে বসে পড়লেন। ক্যাচটি খুলনার শেষ আশার প্রদীপ নিভিয়ে দিল।
১৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে খুলনা টাইগার্স থেমে যায় ১৬০ রানে। ফরচুন বরিশাল ম্যাচ জিতে নেয় ৭ রানে। চট্টগ্রাম পর্বে এটি বরিশালের টানা তৃতীয় জয়। ৮ ম্যাচে ৬ জয়ে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নরা নিজেদের অবস্থান মজবুত করেছে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে।
লম্বা ব্যাটিং লাইনআপ থাকা সত্ত্বেও খুলনার শুরুটা ছিল ধীরগতির। দ্বিতীয় ওভারেই ইমরুল কায়েসকে হারানোর পর নাঈম শেখ ও মেহেদী হাসান মিরাজের জুটি করে ৫১ রান। তবে তাদের ৫৯ বলের এই জুটি টি-টোয়েন্টি মেজাজের সঙ্গে বেমানান। মিরাজ আউট হওয়ার পর নামেন আফিফ হোসেন ধ্রুব। ১৭ বলে ৩৩ রানের এক ঝোড়ো ইনিংস খেলেন তিনি। কিন্তু বড় ইনিংসের পথে থাকা আফিফকে ফিরিয়ে দেন জাহানদাদ খান। তার নিয়ন্ত্রিত বোলিং খুলনার স্বপ্নে জল ঢেলে দেয়।
শেষ ওভারে নাঈমের ৫৯ বলে ৭৭ রানের ইনিংস সত্ত্বেও খেলা টানতে পারেনি খুলনা। ছক্কা-চারের ঝড় তুললেও মালানের দুর্দান্ত ক্যাচে নাঈমের ইনিংস শেষ হয়ে যায়।
টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে বরিশাল। মেহেদী মিরাজের প্রথম ওভারেই তামিম ইকবাল ও ডাভিড মালান বিদায় নেন টানা দুই বলে। তবে সেই বিপর্যয় সামাল দেন মাহমুদউল্লাহ ও রিশাদ। ষষ্ঠ উইকেটে তাদের ৪৭ রানের জুটিতে ম্যাচে ফিরে বরিশাল। মাহমুদউল্লাহ ৪৫ বলে ফিফটি পূর্ণ করেন, আর রিশাদ ১৯ বলে ৩৯ রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলেন।
তাওহিদ হৃদয়ের ৩৬ ও মাহমুদউল্লাহর ৫০ রানের ইনিংস বরিশালের সংগ্রহকে নিয়ে যায় ১৬৭ রানে। যদিও শুরুতে বড় ধাক্কা খেয়েছিল দলটি, তবে শেষদিকে রিশাদের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং প্রতিপক্ষের উপর চাপ বাড়ায়।
মিরাজের বোলিং নৈপুণ্য, তবু হার খুলনার।চার ওভারে ৩৫ রান দিয়ে তিন উইকেট নিয়ে খুলনার সেরা বোলার ছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবু তার সাফল্য যথেষ্ট হয়নি জয় এনে দিতে। বরিশালের বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিং ও ফিল্ডিং শেষ পর্যন্ত ম্যাচের ভাগ্য নির্ধারণ করে দেয়।
এই জয়ে বরিশালের আত্মবিশ্বাসের পালক আরও মজবুত হলো। টানা তৃতীয় জয়ে তামিমের দল শিরোপা ধরে রাখার পথে এগিয়ে গেল আরও এক ধাপ