বাকৃবি প্রতিনিধি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অফিসার পরিষদের বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। অফিসারদের বেতনের কিছু অংশ চাঁদা হিসেবে কর্তন, গঠনতন্ত্র অনুসারে ন্যূনতম সংখ্যক সাধারণ সভা না করা, যেকোনো সিদ্ধান্তে সাধারণ সদস্যদের মতামত না নেওয়া এবং মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার পরেও কমিটি চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন অফিসার পরিষদের একাংশ। এসময় তাদের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ আরীফ জাহাঙ্গীর।
লিখিত বক্তব্যে তাঁরা জানান, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কার্যকরী পরিষদের মেয়াদ এক বছর এবং বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠানের এক মাস পূর্বে নির্বাচন কমিশন গঠন করার কথা। সে অনুযায়ী বর্তমান কমিটির মেয়াদ ১২ ডিসেম্বর উত্তীর্ণ হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো নির্বাচন কমিশন গঠন করেনি তারা। বছর শেষ হওয়ার পূর্বেই কার্যনির্বাহী কমিটির রিপোর্ট ও হিসাব নিরক্ষণ রিপোর্টের উপর আলোচনার জন্য সাধারণ সভা আয়োজন করার কথা থাকলেও তা বাস্তবায়ন করেনি বর্তমান কার্যকরী পরিষদ।
লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, অফিসার সন্ধ্যায় অংশগ্রহনের জন্য সাধারণ সভায় সদস্য প্রতি আটশত টাকা, যুগল ১৬শত টাকা ও সন্তান প্রতি ছয়শত টাকা চাঁদা নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু কার্য-বিবরণীতে চাঁদার পরিমাণ বাড়িয়ে সদস্য প্রতি নয়শত টাকা, যুগল ১৮শত টাকা ও সন্তান প্রতি ছয়শত পঞ্চাশ টাকা চাঁদা এবং অতিরিক্ত কুপন নয়শত টাকা নির্ধারণ করে বর্তমান কমিটি। আলোচনা ছাড়াই অতিরিক্ত চাঁদা নির্ধারণের জন্য অফিসার সন্ধ্যায় অংশগ্রহন করবেন না তাঁরা। নিজেদের বেতন থেকে চাঁদা না কাটার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার বরাবর আবেদন করেন অফিসারস পরিষদের ৮২ জন সদস্য। কিন্তু এর পরেও তাদের বেতন থেকে চাঁদা কর্তন করা হয়। এছাড়াও যেকোনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে অফিসার পরিষদের সকল সাধারণ সদস্যের মতামত না নিয়ে বর্তমান কার্যনির্বাহী কমিটি নিজেদের গুটিকয়েকজনের মতামতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেয় বলেও অভিযোগ করেন তারা।
অভিযোগের বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে অফিসার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ আবুল বাসার আমজাদ বলেন, যে পক্ষটি সাংবাদিক সম্মেলন করেছে তারা সংখ্যায় কম। বর্তমান কমিটির ভালো কাজগুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে তাঁরা এ অভিযোগগুলো করেছে। সাধারণ সভায় বেশিরভাগ সদস্যের মতামতের ভিত্তিতে লিখিতভাবে সিদ্ধান্তগুলো নেওয়া হয়েছিল। সেখানে তাঁদের কোনো অভিযোগ থাকলে তাঁরা লিখিতভাবে কোনো বিষয় আমাদের জানায়নি। উল্টো অফিসার সন্ধ্যার চাঁদার বিষয়টি মীমাংসা করার জন্য তাঁরা রেজিস্ট্রার বরাবর একটি অভিযোগপত্র দেন। এমনকি অফিসার সন্ধ্যা অনুষ্ঠানটি যেন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন না হতে পারে এটা তাঁদের চক্রান্ত।
চাঁদা কর্তনে বিষয়ে তিনি আরও বলেন, পূর্বের কমিটিগুলোতেও একইভাবে সাধারণ সভার সিদ্ধান্তক্রমে বেতন থেকে চাঁদা কর্তন করা হতো।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের এডিশনাল লাইব্রেরিয়ান কৃষিবিদ মো. আব্দুল বাতেন, সংস্থাপনা শাখার ডেপুটি রেজিট্রার কৃষিবিদ মুহাম্মদ মাহবুবুর রহমান (আলমগীর), উপ-প্রধান বাগান তত্ত্বাবধায়ক কৃষিবিদ মুহাম্মদ সাইফুল হকসহ প্রায় ৩০জনের মতো অফিসার উপস্থিত ছিলেন।