মূলতঃ ২০২০ সালের ৯ মার্চ সর্বশেষ মিরপুরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি খেলেছেন তামিম ইকবাল। এরপর প্রায় ২ বছর হতে চললো তিনি এই ফরম্যাটে নাই। ইনজুরি কিংবা দলে অন্যদের সুযোগ দিতে হবে এসব অজুহাতে নিজেকে সরিয়ে রাখছেন। সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে অজুহাত তুললেন, দীর্ঘদিন তিনি টি-টোয়েন্টিতে অনুপস্থিত, এ কারণে এই ফরম্যাটে হঠাৎ করে বিশ্বকাপ খেলা ঠিক হবে না।
এবারও যখন এ নিয়ে কথা উঠছে, তখন তিনি বোর্ডকে জানিয়েছেন আর টি-টোয়েন্টিই খেলবেন না জাতীয় দলের হয়ে। যা মিডিয়াকে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। অবশেষে মিডিয়ার সামনে এসে আজ তামিম জানালেন আগামী ৬ মাস টি-টোয়েন্টি খেলবেন না।
এরপর প্রয়োজন হলে, বোর্ড, সিলেক্টর এবং টিম ম্যানেজ প্রয়োজন মনে করলে তামিম টি-টোয়েন্টিতে ফিরতে পারেন। তবে এ ক্ষেত্রে আরো একটি শর্ত জুড়ে দিয়েছেন। বলেছেন, যদি তিনি নিজেও মনে করেন ফেরার প্রয়োজন, তাহলে ফিরবেন।
গত দুই বছর খেলেননি তামিম, তাতে তার জায়গাটা পূরণ করার মত কাউকে পাওয়া যায়নি। আগামী ৬ মাসেই এই জায়গাটা পূরণ হয়ে যাবে বলে বিশ্বাস তামিম ইকবালের। তিনি মনে করেন, ৬ মাস পর তার আর প্রয়োজনই পড়বে না।
আজ সন্ধ্যা নাগাদ চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে মিডিয়ার মুখোমুখি হয়ে তামিম বলেন, ‘৬ মাস পর যদি এমন একটা সময় আসে যে- ক্রিকেট বোর্ড, সিলেক্টর্স বা টিম ম্যানেজমেন্ট মনে করলো যে না আমার দরকার আছে বিশ্বকাপের আগে, তখন প্রয়োজন হলে এবং আমিও যদি রেডি থাকি, তখন এটা নিয়ে আমরা আলোচনা করবো। সুতরাং, পরবর্তী ৬ মাস আমি টি-টোয়েন্টি নিয়ে কোনোভাবেই কোনো কিছু ভাবছি না। আবারও বলছি, আমার পুরোপুরি বিশ্বাস, এই ৬ মাসে যে টিম টি-টোয়েন্টি খেলবে বা যেসব খেলোয়াড়রা আমার জায়গায় খেলবে, তারা এতই ভালো খেলবে যে আমার দরকার আর পড়বে না।’
পরবর্তীতে আবারও একই কথা বলেন তামিম। তিনি বলেন, ‘আামি যে সিদ্ধান্তটা নিয়েছি, এটা পিউরলি পিউরলি অন ক্রিকেট বেসিস, এছাড়া আর কোনো কিছুই নয়। আমি যেটা বলেছি, আবারও বলছি- ৬ মাস পর আশা করি আমার দরকার পড়বে না। এটাই আমি দোয়া করি যে, আমাদের টিম অসম্ভব ভালো খেলবে। যদি এমন কোনো সিচুয়েশন আসে, বড় ইভেন্টের আগে যদি টিম ম্যানেজমেন্ট, বোর্ড, আমি নিজেও যদি মনে করি যে, আমার দরকার আছে টিমে, তখন আমি রিকনসিডার করবো। তবে এই মুহূর্তে আমি আর এ ব্যাপারে কোনো কিছু চিন্তা করছি না।’
তামিমের কাছে প্রশ্ন ছিল, টি-টোয়েন্টি দলটাকে আরেকটু এগিয়ে দিলেন না কেন?
জবাবে তামিম বলেন, ‘আমি থাকলেই যে আগাবে, আমি না থাকলেই যে আগাবে না- এমন কোনো কথা নেই। আমি যেটা বললাম, গত সিরিজেও আমরা অনেক তরুণ খেলোয়াড়কে সুযোগ দিয়েছি। ওদেরকে আরও যথেষ্ট পরিমাণ সুযোগ দেয়া দরকার। এক সিরিজ কিংবা দুই সিরিজে যদি আমরা ওদের ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলি এটা ভুল। এ কারণে ৬ মাস যথেষ্ট সময়। ৬ মাস পর আমি ব্যক্তিগতভাবে অনেকটা সিউর যে আমার আর দরকার হবে না। তারপরও বিশ্বকাপের আগে যদি টিম ম্যানেজমেন্ট ফিল করে, বোর্ড কিংবা আমি নিজেও, তাহলে হয়তো খেলবো। তবে এই মুহূর্তে নয়।’
আবারও প্রশ্ন উঠে আসে, এই টিমটারও তো আপনাকেই দরকার ছিল এই মুহূর্তে। জবাবে তামিম বলেন, ‘৬ মাস দেখেন। আমি তো বললাম, ওই সময় যদি দরকার হয়। তবে আমি পুরোপুরি বিশ্বাসী, আমাদের অনেক ক্যাপাবল ক্রিকেটার আছে। যাদের কারণে হয়তো বা আমার আর দরকার হবে না।’
সর্বশেষ প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনি ১৪ বছর ক্যারিয়ারের কথা বলছেন। এই ১৪ বছরে আপনার জায়গাটাতে কেউ থিতু হতে পারেনি। কিন্তু আপনি কিভাবে মনে করলেন যে, মাত্র ৬ মাসে এ জায়গাটা ফিলআপ হয়ে যাবে?’
তামিম বলেন, ‘দেখেন আমি এটাই আশা করি। আমি সব সময়ই একটা কথা বলেছি যে, আমি আশা করি এবং বিশ্বাসও করি- আমাদের যারা টি-টোয়েন্টিতে ওপেন করছে, তাদের সব ধরনের ক্যাপাবিলিটিজ আছে। আমি নিশ্চিত যে তারা ভালো করবে। আমি কোনোভাবেই আমার টিমমেট, সতীর্থদের ব্যাড রিড করতে পারবো না। তারা আমার সতীর্থ, আমার বন্ধু। তারা ভালো করবে এবং এরপর আমার দরকার আর পড়বে না।’