বলা হয়ে থাকে,পৃথিবীতে প্রেম নাকি অবিনশ্বর।মনের গহীনে বিন্দু বিন্দু স্বপ্নের রং তুলিতে আঁকা সৌন্দর্যের নানান প্রতিচ্ছবি।প্রেম অন্ধ মনকে আলোকিত করে।দুর্বল কে করে শক্তিশালী। উদাস মনকে করে তোলে শান্ত, সাধারণ মানুষ হয়ে উঠে কবি, প্রেম সাধারণ কে করে তোলে অসাধারণ।পৃথিবীতে এমন মানুষ খুবই বিরল যে জীবনে কখনো প্রেমে পড়ে নাই।প্রেম জীবনের এক সুন্দর অনুভূতির নাম।একমাত্র প্রেম নিয়ে যুগের পর যুগ রচিত হয়েছে গল্প কিংবা উপন্যাস।
প্রেম কাউকে ভাঁসিয়ে অপার সুখের স্রোতে, কাউকে বিরহের জলে আবার কাউকে ভবঘুরে, করেছে সিংহাসন চ্যুত। আগেরকার দিনে কবুতর এর নখে কিংবা মুখে করে উড়ো চিঠির মাধ্যমে প্রেমিক-প্রেমিকারা তাদের মনের আকুতিগুলো আদান প্রদান করত। আর প্রিয়তমার প্রতিত্তুরের প্রেমিককে অপেক্ষা জন্য করতে হয়েছে দিনের পর দিন ও রাত-বিরাত। অনেক মুহুর্তের ক্ষয় করে অবশেষে একটি ছড়া কিংবা ছত্র পেয়ে শীতল করতে হয়েছে অতৃপ্ত মনকে। সে প্রেম ও ভালবাসা ছিল চিরঞ্জীব ।
সময়ের পরিক্রমায় আধুনিক এ যুগে প্রেমের এখন হরেক রকম। হয়েছে আরো গতিশীল। মুহুর্তের মধ্যে প্রেমিক প্রেমিকারা তাদের মাঝে বিরহ খরা মেটাতে পারে। তেমনি আবার মুহুর্তের মাঝে প্রেম কেনা বেচা হয়। প্রিয়জনের সাথে বিরহ ব্যথা সহজে কাটিয়ে তোলার জন্য নতুন সঙ্গির সুযোগ কিন্তু এখন কম না।আগের যুগের প্রেম এবং আধুনিক যুগের প্রেমের মধ্যে রয়েছে এক বিশাল ফারাক।আগের সম্পর্ক যেমন ছিল অনেক শক্তিশালী,বর্তমানে সম্পর্ক গুলো খুবই দুর্বল, এবং ডিভোর্সের পরিমাণ অনেক বেশি। মন ভাঙ্গার গল্প আধুনিক যুগে সবচেয়ে বেশি পরিলক্ষিত হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বর্ণিল ও আনন্দচ্ছটা জীবন। একটি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অপরিচিত মুখগুলো একসময় সবার কাছে হয়ে উঠে খুব চিরচেনা। দীর্ঘ সময়ের জন্য পরস্পরের মধ্যে গড়ে ওঠে নিবীড় বন্ধন। হাসি,ছন্দে আনন্দে,প্রেম বিরহে ভরপুর থাকে এ জীবন। তবে এখানে প্রেম বিষয়টি বিভিন্ন জনের কাছে বিভিন্ন রকম হয়। কেউ শুধু অনাবিল সুখকে পছন্দ করে বেচে নেন ঠিক একই ভাবে আবার ছ্যাঁকা নামক মানসিক যন্ত্রণার কাছেও হন পরিচিত। এর মাধ্যমে অনেকের কাছে জীবন একটি বিভীষিকাময় অধ্যায় হিসেবে রচিত হয়। ফলে অনেকেই এর জ্বালা সইতে না পেরে দেন আত্মাহুতি। আবার কারো কাছে ছাত্রজীবনে প্রেমের চেয়ে বন্ধুত্বের মূল্য অনেক বেশি। বিশ্ববিদ্যালয়ে সহ-শিক্ষার ফলে এখানে ছেলে কিংবা মেয়ের মধ্যে বন্ধুত্বের কোন তফাৎ গড়ে উঠেনা। ফলে হাসি আড্ডা গানে সবাই কাধে কাধ মিলিয়ে হেঁসে খেলে মুখরিত করেন আনন্দের।
বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে এসে প্রেমে পড়ার কাহিনী বললেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় এর আলোচিত জুটি, জায়ীদ এবং তিশা। তাদের জুটি বেশ আলোচিত হলেও তাদের প্রেমটি অনেকটা লুকিয়ে লুকিয়ে হয়।তবু তারা অনেক আলোচিত, কারণ কথায় আছে না,সত্যিকারের ভালবাসা কখনো লুকিয়ে রাখা যায় না। তাদের ভালোবাসা এখনো পূর্ণতা না পেলেও তারা অনেক আলোচিত।
ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের,মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শুভ্র তার প্রিয়সি অবনীর প্রেমে পড়ার গল্পটি এখন ক্যাম্পাসের সবার জানা।বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশেই কারমাইকেল কলেজ, আর সেখানেই পড়াশোনা অবনীর।শুভ্র যখন অবনীকে প্রথম দেখে তখনই তার প্রেমে পড়ে যাই। এবং তার মায়ায় পড়ে যায়।এরপর,ফেসবুক থেকে অবনীর আইডি পেয়ে যায় শুভ্র, এরপর সে তার ভালো লাগার কথা জানাই। এভাবে শুরু হয় তাদের তাদের প্রেম।
এই ক্যাম্পাসে রয়েছে অসংখ্য গল্প অসংখ্য প্রেম ও মন ভাঙার গল্প।এর মাঝে কিছু প্রেম পূর্ণতা পাই আবার কিছু প্রেম পূর্ণতা পায় না।
পরিসংখ্যান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী, হিমু, তার ক্লাসমেট প্রাপ্তির প্রেমে পড়েন প্রথম বর্ষে এরপর তাদের ভালবাসা পূর্ণতা পায় দ্বিতীয় বর্ষে এসে যখন সে তার ভালোবাসার কথাটি তাকে জানাই। হিমু বলেন, খুব দ্রুত তাদের ভালোবাসা পূর্ণতা পেতে যাচ্ছে। এ ক্যাম্পাসে তারা গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান করে যেতে চাই।
অনেকেই আবার জীবনের কঠিন বাস্তবতা উপলব্ধি করে পড়াশুনায় আছেন ব্যস্ত। নিজের ক্যারিয়ার,যোগ্যতা ও জাতিকে নেতৃত্ব দেবার মানসে বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবনকে বর্তমান দুনিয়ায় নিজের জীবনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে বেছে নিয়েছেন। ফলস্বরুপ একাডেমিক কার্যক্রম, খেলাধুলা ও অন্যান্য সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে নিজেদের তৈরি করছেন। আর অপেক্ষা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে আগামী দিনে পরিবার ও জাতির প্রাপ্তি ও প্রত্যাশা পূরণের।